সীমান্ত প্রহরায় ।। ৭ ।। গন্তব্য প্যাংগং

 

গন্তব্য প্যাংগং

২৮শে জুলাই ২০২২

 

মোবাইল টাওয়ার সর্বত্র না পাওয়া এবং ক্রমাগত যাত্রার ধকলে দু’দিন মুখপুস্তকীয় দিনলিপি লেখা হয়নি। সুমুরে নেট থাকলেও একটু সময় পেতে চলভাষের বদলে রাইটিং প্যাডেই হুন্দর বালিয়াড়ির গল্প লিখে ফেললাম। কাগজে অবশ্য আলোকচিত্র সংযুক্ত করা যায় না। তাছাড়া সিয়াচেনের সেরা ছবিগুলো বাপ বেটীর মোবাইলে।

     ২৮ তারিখ ছিল সুমুর থেকে দুরবুকের দিকে যাত্রা। পশ্চিম ও উত্তর সীমান্ত থেকে পূর্বে ফেরার পালা। উদ্দেশ্য প্যাংগং হ্রদ। অধিকাংশ পর্যটক প্যাংগং-এর ধারে কুটির বা শিবিরে থাকে, পর্যটকীয় ভাষায় যাদের যথাক্রমে কটেজ ও টেন্ট বলে। কিন্তু শুভঙ্করের সহকর্মীবৃন্দের সম্মিলিত আবেদন তথা আদেশ ছিল, আতিথেয়তা তাদের তত্ত্বাবধানেই নিতে হবে।

 

দুরবুক ও তাংসে


দুরবুক লে জেলারই দুরবুক মহকুমা ও ব্লকের সদর দফতর। রাস্তার ধার বেয়ে ছোটা ছোটো ছোটো পাহাড়ী নালা, কোথাও বা খুদে খুদে বৃক্ষ – সব মিলিয়ে রূপকথার দেশ দিয়ে চলেছি যেন। লাদাখ কাশ্মীরের মতো প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যে রঙীন নয়, কিন্তু নীল আকাশের নীচে মেটে-পাঁশুটে ভূপ্রকৃতিও কেমন যেন স্বপ্নের মতো সম্মোহক লাগছিল। মনে হচ্ছিল রাস্তায় নাম-না-জানা স্থানেই নেমে পড়ি। এই অঞ্চলের নদী-নালা স্বচ্ছতোয়া, লে বা সিয়াচেনের দিকেও যেমন কাদাগোলা ঘোলাটে দেখে এসেছি, তেমন নয়।

     ক্ষণে ক্ষণে শুভঙ্করের পোস্টপেইড নম্বরে খোঁজ নিচ্ছিলেন মানবেন্দ্র মণ্ডল, “স্যর, আপনারা কতদুর?” দুপুর নাগাদ আমাদের গাড়ি থামল দুরবুকের ডিফেন্স অ্যাকাউন্টস্ ডিপার্টমেন্টের দপ্তরে। বর্ডার রোডস্‌-এর ছড়ানো-ছেটানো দপ্তর। যেহেতু ছুটির দিন নয়, মানবেন্দ্রর সঙ্গে দেখা করতে প্রথমে সেখানেই নামতে হল। দুরবুকে বেশ ঠাণ্ডা আমেজ। মানবেন্দ্র ওরফে মানু জানালেন আমাদের থাকার বন্দোবস্ত দুরবুক থেকে অদূরে তাংসে নামের জায়গায় হয়েছে। সুতরাং চা খেয়ে আবার গাড়িতে উঠে আমাদের জন্য সীমা সড়কের নির্ধারিত অতিথিশালায় গেলাম। আমাদের নামিয়ে রিগজ়িন চলে গেল ড্রাইভারদের জন্য বরাদ্দ মেসে।

   এদিকে মালপত্র সমেত নির্ধারিত ঘরে যেতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া। আসবাবশোভিত সুসজ্জিত দুটো প্রকাণ্ড বসার ঘর পেরিয়ে আমাদের শোবার ঘর। বসার ঘরদুটোর বিশাল জানলার পর্দা সরাতেই মনে হল একটা খরস্রোতা নদীতে ভেসে চলেছি। অধিক উচ্চতা, কম অক্সিজেন ও শীত সব উপেক্ষা করে সামনের ঘর লাগোয়া দরজা খুলে সিঁড়ি দিয়ে সোজা নদীর ধারে ছুটে নেমে গেলাম। গিয়েই জলে হাত দিয়ে মেয়েকে দিয়ে পটাপট নিজের ছ্যাবলামির ছবি তুলিয়ে নিলাম। বেড়াতে গেলে আমি খুকী হয়ে যাই, আর আমার খুকী যায় ভেটকে। উচ্ছ্বাসের মধ্যেই আশেপাশে কুকুরের বর্জ্য চোখে পড়তে অবশ্য একটু তাল কেটে গেল। ঘরে ফিরে এলাম। আমার উচ্ছাস দেখে মানবেন্দ্র পরিতৃপ্তির হাসি হেসে বলল, “ম্যাডাম এই জন্যই দুরবুকের বদলে এখানে ব্যবস্থা করেছি। জানতাম, আপনাদের ভালো লাগবে।”

  দুপুরে খাবার দেখে ছানাবড়া চোখ বার্গার হয়ে গেল। তিনজনের জন্য কমপক্ষে ছ-সাত জনের খাবার। কমাতে বলায় রুটির সংখ্যা ছাড়া বিশেষ কিছুই কমল না। অধিকাংশ ডিফেন্স মেস ও গেস্টহাউসেই দেখেছি কমবেশি খাদ্য অপচয় হয়, কম করতে বললেও শোনে না। উদবৃত্ত খাবার তারপর কখনও যায় কুকুরের পেটে কখনও আস্তাকুঁড়ে। আমার গায়ে লাগলেও এরা অপচয়েই অভ্যস্থ। মানবেন্দ্রর কথায় খাদ্যের অভাবে যেহেতু কুকুরগুলো সাক্ষাৎ নেকড়ে হয়ে রাতে মানুষকে আক্রমণ করে কঙ্কাল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট রাখে না, তাই উদ্বৃত্ত খাদ্য দিয়ে নাকি তাদের শান্ত রাখা হয়। যুক্তি বটে।

       তবে এমন গেস্টহাউসে জীবনে থাকিনি, ভবিষ্যতেও থাকা হবে কিনা সন্দেহ। তিন কামরার প্রকাণ্ড সুইটের গা বেয়ে স্বচ্ছ বেগবতী পাহাড়ী নদী। নদীর নাম ওদের ডিপার্টমেন্টের কেউ বলতে পারল না। এই নদীর নাকি নাম নেই। বেয়ারাদের একজন বলল, ‘তাংসে’। মনে হল এমন প্রশ্নের সম্মুখীন ওরা আগে কখনও হয়নি; তাই কিছু একটা নাম দিতে হবে বলে জায়গার নামে নাম রেখে দিল। তাই সই। এখানে অনামিকা পাহাড়ী নালাগুলোর সংখ্যা ও সৌন্দর্য প্রধান নদগুলোর চেয়ে বেশি। কেমন যেন রূপকথার মতো লাগছিল।

   খাওয়ার পর প্যাংগং যাওয়ার প্রস্তাব দিল মানবেন্দ্র। আমি একপায়ে খাড়া। কিন্তু রিগজ়িন মেঘলা বিকেলে অতদূর না গিয়ে পরিবর্তে কাছাকাছি একটা মনেস্ট্রি ঘুরিয়ে দিতে চাইল প্যাংগং পরের দিন ঘুরিয়ে দেবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে। শুভঙ্কর ও উর্বীও বিশ্রাম করারই পক্ষে। কিন্তু আমার ভ্রমণসূচী বলল হাতে সময় নেই। এখন আকাশ মেঘলা, বেরোনো যায়। কিন্তু আগামীকাল যদি বৃষ্টি হয় তো আরও কেলো। এদিকে তো সন্ধে সাতটাতেও বিকেলের আলো থাকে। সুতরাং পঁয়তাল্লিশ মিনিট কি ঘণ্টাখানেকের রাস্তা হলেও বিকেল সাড়ে তিনটেয় বেরোলে ঘুরে আসা যাবে। আমার তাড়নায় ও মানবেন্দ্রর উৎসাহে আমার বর, কন্যা ও চালক গা ঝাড়া দিতে বাধ্য হল। রিগজ়িন খুঁতখুঁত করতে করতে শুভঙ্করের সঙ্গে রফা করল, আগামীকাল প্যাংগং-এর পথ না ধরে সোজা চুশুল উপত্যকা হয়ে সোমোরিরি হ্রদ যাওয়ার সময় রাস্তা ধরবে।

 

প্যাংগং সো 


পৃথিবীর উচ্চতম লবণাক্ত জলের হ্রদ প্যাংগং বা Pangong Tso উচ্চতা ৪২২৫ মিটার বা ১৩৮৬২ ফুট। সূত্রান্তরে ৪৩৫০ মিটার (১৪০০০ ফুট)। পূর্ব লাদাখ থেকে পশ্চিম তিব্বত পর্যন্ত বিস্তৃত লম্বাটে এই হ্রদের দৈর্ঘ্য ১৩৪ কিলোমিটার, মোট ৫টি খণ্ডে বা উপহ্রদে বিভক্ত, যেগুলো নাম যথাক্রমে প্যাংগং সো (Pangong Tso), সো নায়ক (Tso Nyak), রাম সো (Rum Tso) যেটা আসলে একজোড়া হ্রদ (twin lakes) এবং নায়ক সো (Nyak Tso)। ‘সো’ হল তিব্বতী ভাষায় হ্রদ। লম্বায় বিরাট হলেও সর্বাধিক প্রস্থ ৫ কিলোমিটার বা ৩.১ মাইল। সবমিলিয়ে ৭০০ বর্গ কিলোমিটার ক্ষেত্রফলের প্রকাণ্ড হ্রদ। লবণাক্ত হলেও শীতে পুরোপুরি জমে যায়। সিন্ধুনদের উপত্যকা থেকে পার্বত্য স্থলভূমি দ্বারা বিচ্ছিন্ন, তবে প্রাগৈতিহাসিক কালে সংযুক্ত ছিল মনে করা হয়। সুদীর্ঘ এই হ্রদের পাঁচটি খণ্ডই স্থলভাগ দিয়ে ঘেরা বলে একে endorheic lake বলা হয়।

   এ তো গেল তথ্যের কচকচি। আন্তর্জালকে খোঁজাখুঁজি করলেই পাওয়া যাবে। কিন্তু রাস্তায় বিচিত্র ভূমিপ্রকৃতি দেখে পরতে পরতে বিস্মিত হতে হয়। ঘাস যে কতরকম ভাস্কর্য সৃষ্টি করতে পারে, প্যাংগং তার নিদর্শন। মঙ্গু, খচ্চড় ও গাধা দেখে হৈহৈ করে ছবি তুললাম। তবে তার চেয়েও বিস্মিত হলাম একটা বাইকের পেছনে এলো চুল ওড়ানো সাজুগুজু করা একটি মেয়েকে দেখে। পায়ে জুতো মোজা কিচ্ছু নেই দেখে। মেঘলা আকাশের নীচে ভালো ঠাণ্ডা। বাতাস তো নির্ঘাৎ পায়ের পাতায় সূচ ফোটাচ্ছে। বাইক বাহিনী লাদাখের প্রায় সর্বত্রই দেখেছি, কিন্তু এমন মেকআপ করা প্যান্ট-জ্যাকেট পরেও নগ্ন পায়ের আরোহী আর কাউকে দেখিনি। বাইক চোখের আড়াল হলে আবার পথের সৌন্দর্যে ডুবে গেলাম।

        ভীষণ সুন্দর মসৃণ স্বপ্নালু রাস্তার স্থানে স্থানে অর্ধবৃত্তাকার একটু চত্ত্বর, সম্ভবত অন্য গাড়িকে পাস দেওয়া জন্য। একটা সুন্দর রাস্তায় ‘জব তক হেয় জান’ মিউজ়িক ভিডিওর শুটিং স্পট। শাহরুখ-অনুষ্কার ছবি লাগানো বোর্ডের কাছে পর্যটকরা দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছে। আমাদের সেসবে আগ্রহ না থাকলেও নিসর্গ তো পান করাই যায়। 

        রাস্তা চওড়া করার কাজ চলছিল বলে একটু থামতে হল। শেষে আরও খানিক এগিয়ে যখন প্যাংগং চোখে পড়ল, তখন তার সৌন্দর্য ও বিশালত্বে তিনজনেই মোহিত। ড্রাইভার এদিন আসতে চায়নি পরের দিন সোমোরিরি দেখানোর পথে নিয়ে যাবে বলে। আমার জেদেই তাকে মধ্যাহ্নভোজন সেরেই গাড়িতে উঠতে হয়েছে। আকাশ মেঘলা। দূরের পাহাড়ে তুষারপাত হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে। আমি পতিত তুষারে খেলা করেছি, কিন্তু তুষারের পতন আজ পর্যন্ত দেখিনি। তাই পাহাড়ের আকাশে কালো মেঘ দেখলেই কামনা করি, শুধু চূড়া নয় ঐ রাশি রাশি ধবল কণা যেন পাদদেশেও বর্ষিত হয়; দু হাত বাড়িয়ে একটু ছোঁব। অবশ্য তেমন হলে লেক পর্যন্ত যাওয়ার বদলে হয়তো ফিরতেই হত। 

        ড্রাইভার বলল, “আসমান সাফ নহী রহেনে পর কালার চেঞ্জ নহী দিখেগা।” লেকিন ফিরভী জো দেখা, হম তো উসিমে ফিদা হো গয়ে। কিন্তু দেখলাম আর কতটুকু। মোট দৈর্ঘ্যের ৫০ শতাংশই তো তিব্বতে পড়েছে যা অধুনা চিনের কবলে, ৪০ শতাংশ ভারতের লাদাখে, আর ১০ শতাংশ ভারত-চিনের মাঝে বিতর্কিত বাফার জ়োনে। সমগ্র লাদাখের মতো এখানেও সেনা তৎপরতা চোখে পড়ল। সবকিছু টিপটপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

        যেখানে থ্রি ইডিয়েট শুটিংএর সৌজন্যে কিছু নকল হলুদ রঙা স্কুটার আর অসভ্য পাছু বেঞ্চ বসানো আছে, সেই পর্যন্ত গাড়ি গেল। আমরা গাড়ি থেকে নামতেই হিলহিলে বাতাস। তবুও জলের ধারে গিয়ে ছবি তুললাম। এক সেনা কর্মী তার পরিবারের ছবি তুলছিল। আমাদের তিনজনের ছবি তুলে দিতে সে বলায় আমাকে বলল মাথার স্কার্ফ খুলে চুল উড়িয়ে ছবি তুলতে। ঐ দক্ষিণ ভারতীয় ভদ্রলোকের এক কন্যা নুপূর পরা খালি পা নিয়ে কনকনে জলে নেমে ফটোশুট করছিল। অবাক হয়ে মেয়েটিকে দেখতে দেখতে রাস্তায় বাইক-বিহারিণী নগ্নপদা এলোকেশীকেও লেকের ধারে আবার চোখে পড়ল।

        মেয়েরা মনে হয় আমার ও আমার কন্যার মতো শীত-কাতুরে হয় না। নিজেই এগিয়ে গিয়ে ওর শীতকে কাবু করার রহস্য জানতে চাইলাম। ও হাসল, “জুতা ভীগ গয়া থা।” রাস্তায় মধ্যে মধ্যে পাহাড়ি ঝোরা বয়ে গেছে। গাড়িতে বসে সমস্যা হয় না, কিন্তু বাইকের চাকা ডুবলে চড়নদারেরা ভিজে যেতেই পারে। জিজ্ঞাসা করলাম, বাইক কি দু’জনে পালা করে চালাচ্ছে। ওর বর হাসল, “অ্যায়সা নসীব কঁহা? দিল্লী সে অকেলে চলা রহা হু ম্যাডাম কো পিছে বৈঠাকর।”

        শুভঙ্করও হাসল, “ফিরভী বেহেতর, মেরীওয়ালী তো বাইককে পিছে বৈঠকর সো ভী জাতী হ্যায়। অচানক ঝটকে সে পতা চলতা।”

        ফেরার পথে লেকের গোড়ার দিকে যেখানে একটা স্তূপ ছিল সেখানে নামলাম আমরা। সেদিকটা আরও সুন্দর লাগল। উর্বী নামল না। আমরা দু’জন কাঁপতে কাঁপতে নানা ভঙ্গিমায় ছবি তুলে প্রসন্ন চিত্তে গাড়িতে উঠলাম। যাক আমাদের শীতবস্ত্র বয়ে নিয়ে যাওয়া এদিন সার্থক হল। অন্যত্র হয় গরম নয় মনোরম নাতিশীতোষ্ণ।


মেসে ফিরে

মেসে ফিরতেই কফি। মানবেন্দ্র দশ কিলোমিটার দূরে দুরবুক থেকে এসেছে নিজে তদারকি করবে বলে। সঙ্গে একগাদা শুকনো ফল, হলস্ লজেন্স ও বিস্কুটের প্যাকেট। এত কে খাবে? একদিকে বলছে, এখানে নাকি খিদে হয় না, খাওয়া যায় না; অন্যদিকে আমাদের জন্য এই আয়োজন। প্যাকেটে বলে অবশ্য অপচয় হল না, শুভঙ্করের বারণ না শুনে কিছুকিছু ব্যাগে ভরে ফেললাম। তবে নৈশভোজে যেই কে সেই। খেতে বসার আগেই পাঁচটা রুটি রেখে বাকিগুলো ফেরত পাঠালাম। আমি চিকেন ফ্রাই আস্তাকুড়ে ফেলার বদলে ছাঁদা বেঁধে রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলাম। পরের দিন খুব সকালে বেরোনো, ব্রেকফাস্ট হবে না; এগুলোই গরম করে চায়ের সঙ্গে খাওয়া যেত। কিন্তু গরীবের কথা কে শোনে? সব গেল কুকুরের সৎকারে।

     প্রথমদিন দুপুরের এলাহি খাদ্যের আয়োজন ছিল মানবেন্দ্র মণ্ডল অ্যান্ড কোং-এর তরফ থেকে। পরের দিন প্রকাণ্ড সুইটে এক রাত্রি থাকা ও তিনজনের খাওয়া মিলিয়ে মাত্র ৭০০ টাকা লাগল। এই তথ্য অবশ্য সর্বসাধারণের কাজে নাও লাগতে পারে।

      রাতে ঘর গরম করার জন্য কিছুক্ষণ কেরোসিনের বুখারি জ্বালানো হল। গন্ধের চোটে মাঝরাতে আমি কুপোকাত। ওদিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার গাড়িতে। আমার বর ড্রাইভারের ঘুম ভাঙিয়ে কিছুতেই ব্যতিব্যস্ত করবেন না। শেষে অ্যালার্জির জোড়া ওষুধ খেয়ে শোবার ঘরের বাইরে ড্রয়িং-কাম ডাইনিং রুমের সোফায় মুড়িশুড়ি দিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভেঙে দেখি মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। মানে আমার ‘উনি’ আমি অসুস্থ হওয়া ইস্তক ঘুমোননি, যাতে ভোর হতে না হতেই ড্রাইভাকে ডেকে আমায় অক্সিজেন দেওয়া যায়। আমি টেরই পাইনি।



Post a Comment

Previous Post Next Post