কবিতা

 

মনের দেয়াল

হাশিম কিয়াম

 

মনের দেয়াল গুঁড়িয়ে-দেওয়া ঝড়ো হাওয়ায়

ভেসে এসে চাষি বউয়ের ঝাঁট-দেয়া উঠোনে

একটি ভোর হেসে উঠুক

সরল চোখের উচ্ছ্বাসের ঢেউ ভেঙে-ভেঙে 

দুবলা ফুলের বাগানজুড়ে

আলোর ফালি নাচতে থাকুক 

ঢেঁকিতে-ভানা আউশ ধানের লালচে চালের

পান্তার ঘ্রাণে মাতাল হোক ঘাড়ত্যাড়া

পাগলা ঘোড়া

বুকের মাঝে বইতে থাকুক 

হীরে-কাটা-আলোর ঝরনা

ঝিমিয়ে পড়া হীরেমন পাখি জোছনা মেখে

জ্বলে উঠুক

মেঠো পথের সোনালি ধুলো

পিচের জঙে আগুন জ্বালুক...

 

 

ধোঁয়া উড়ে না

মনিরুজ্জামান প্রমুখ 

 

অস্থিরতার ফুলদানিগুলো জমা করে বানিয়েছো 

গোপন রাগের পাহাড়। 

সে পাহাড়ে ওঠার জমাজাতীর কোনো সম্বল 

আমার সামর্থ্যে নেই। 

 

সুবর্ণ অফারের খোলা প্রান্তরের 

টিকেট তুমি পেয়েছো। 

কিন্তু নাওনি অবনিবনার মানদণ্ড খুঁড়তে খুঁড়তে। 

 

তবু দিনের অতিক্রমে দিন আসে পালক নিয়ে। 

নবো জাগরণের মোহ নিয়ে

পালিত হতে, দলিত হতে, মথিত হতে। 

 

আমরা ভালোবাসায় সমর্পিত হতে জানি না বলে

ভালোবাসার চুরুট পাই ঠিকই। 

ধোঁয়া তাতে উড়ে না। 

 

 

নীরবতা প্রাণমুখর

দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়

 

এই যে ধুধু প্রান্তর----

এখানে মানুষ থাকে না ।

একটা গাছ আর তার বউ --

সুখের সংসার ওদের,

নির্জনে, নিরাপদে ।

ওদের তাই অভিযোগও নেই।

ওরা জানে চারিদিকে এই যে নীরবতা

এর নামই ঈশ্বর।

ওরা ঈশ্বরের রাজত্বে থাকে।

ওরা ভালোবেসে থাকে ।

 

             

 

ইচ্ছে

নজর উল ইসলাম

 

ইচ্ছের কাছে থাকে অফুরান মায়ার বাঁধন

দেখি তোমার জোছনা জড়ানো ভাঁজের পরত 

অপার মেঘের আনন্দ এলোমেলো হাওয়া 

ভাষার প্রার্থনা করি সমুদ্রস্নানে যাওয়া

 

কী জাদু মেখেছ মনে শরীরে তার শিল্পরূপ 

বুকের গভীরে আরও শখের কারুজয় 

একথা জেনেছি জীবন-অভিধান থেকে 

অচেনা হয়েও ছুঁয়েছ মননীড়ে চিরস্বাধীন 

 

কেন এত বিস্তীর্ণ প্রণয় আগুন 

কেন এত ডান ওড়াও অতীব সুখকর 

পাখির গানে গানে আমন্ত্রিত সুখ— 

কী যেন উথাল-পাথাল প্রশ্নচিহ্নে আজ...


Post a Comment

Previous Post Next Post