ছোটগল্প
অগ্নিবীণা
অধ্যায় ১: কলকাতার অন্ধকার
১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট। স্বাধীনতার আনন্দের সঙ্গে শহরে দাঙ্গার এক কালো
ছায়া নেমে এসেছিল। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা ছিল চরমে, যা
ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং রাজনৈতিক শূন্যতার সঙ্গে মিশে কলকাতাকে এক অচেনা রূপে ভর
করেছিল। শহরের বাতাস ছিল ভয় আর সংশয়ে ভারী। নদীর ধারের পুরোনো বাংলো, বারান্দার
লোহার গ্রিল, আর ঝোপঝাড়ে ভরা রাস্তাগুলো নিস্তব্ধ মনে হচ্ছিল। দিনের আলোতেও মানুষ
ঘরের বাইরে বেরোনোর সাহস পেত না। দূরে কোনো শিশুর কান্না বা কোনো বৃদ্ধের দমকা
কাশি যেন সেই আতঙ্কেরই প্রতিফলন ছিল।
বাগবাজারের এক পুরোনো, বিশাল বাংলোতে ঘটল সেই হত্যাকাণ্ড। ব্রিটিশ
সেনাবাহিনীর তরুণ ক্যাপ্টেন রবার্ট ম্যাকেনজিকে তার নিজের বাংলোর ভেতরেই মৃত
অবস্থায় পাওয়া গেল। তার বুকে ছিল একটি ধারালো ছুরি বিদ্ধ। তিনি কেবল একজন অভিজ্ঞ
সেনা কর্মকর্তাই ছিলেন না, স্থানীয়দের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন একজন সদয় এবং
গোপনীয় ব্যক্তি হিসেবে। কিন্তু তার আসল পরিচয় ছিল আরও গভীর—তিনি ছিলেন একজন
গুপ্তচর। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সহায়তা করতেন এবং ব্রিটিশ সরকারের ওপর গোপনে নজর
রাখতেন। তার মৃত্যুর খবর শহরে ছড়িয়ে পড়তেই জনমনে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেল।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছল, কিন্তু সেখানে কোনো সূত্র ছিল না। বাংলোর
ভেতরের ঘরগুলো নিস্তব্ধ, শুধু মৃত্যুর নীরব ছায়া। টেবিলের ওপর আধপোড়া একটি
সিগারেট, মেঝেতে ছড়িয়ে থাকা কিছু কাগজপত্র এবং একটি ভাঙা কাঁচের টুকরো ছাড়া আর
কিছুই ছিল না। বাংলোর কেয়ারটেকার রামদীন ছিল প্রথম ব্যক্তি যে ম্যাকেনজির মৃতদেহ
দেখতে পায়। সে আতঙ্কে প্রায় বাক্যহারা হয়ে গিয়েছিল। মানুষ নানা ধরনের গুজব ছড়াতে
শুরু করল। কেউ বলল এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, কেউ বলল ব্যক্তিগত শত্রুতার ফসল, আবার
কেউ বলল এর পেছনে রয়েছে ব্রিটিশ সরকারেরই কোনো গোপন হাত। শহরে তখন অসংখ্য গল্প আর
গুজব ভাসছিল, যার কোনোটারই কোনো ভিত্তি ছিল না।
অধ্যায় ২: গোয়েন্দা অরুণ
অরুণ একজন বুদ্ধিমান এবং নির্ভীক গোয়েন্দা। তার জীবনের এক করুণ অধ্যায় ছিল
অতীতে রাজনৈতিক হিংসায় পরিবারের সবাইকে হারানো। সেই ট্র্যাজেডিই তাকে মানুষের
গোপন রহস্য উন্মোচনের জন্য প্ররোচিত করেছিল। তিনি বিশ্বাস করতেন, সমাজের গভীরে
লুকিয়ে থাকা অপরাধের মূল খুঁজে বের করতে পারলেই হয়তো শান্তি ফিরে আসবে। এই
বিশ্বাসই তাকে গোয়েন্দা পেশায় টেনে এনেছিল।
অরুণ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছলেন, তখন তিনি পুলিশের ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকলেন।
সাব-ইন্সপেক্টর সুকুমার সেনের সঙ্গে তার পুরোনো পরিচয় ছিল। সুকুমার তাকে এক পাশে
ডেকে নিয়ে বললেন, “অরুণ, এই কেসটা আমাদের সবার মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। কোনো সূত্র
নেই।” অরুণ চারপাশটা খুঁটিয়ে দেখতে শুরু করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, এই
হত্যাকাণ্ডটি কেবল ব্যক্তিগত শত্রুতার নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ।
ধুলোময় আসবাবপত্র, ভাঙা জানালা এবং অদ্ভুতভাবে খোলা একটি কক্ষ—সবকিছুই তার
তীক্ষ্ণ নজরে পড়ল। মেঝেতে পড়ে থাকা কাগজগুলো তিনি সাবধানে তুলে নিলেন। ম্যাকেনজির
ব্যক্তিগত ডায়েরির ছেঁড়া পাতাগুলো অরুণকে প্রথম সূত্র দিল। তাঁর মনোযোগী বিশ্লেষণ
ক্ষমতা এবং ধৈর্য নতুন সূত্র খুঁজে বের করতে সাহায্য করল। অরুণের কাজের ধারা ধীরে
ধীরে শহরের গোপন রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কের জটিলতার সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করিয়ে
দেয়।
অধ্যায় ৩: ইতিহাসের গোপন অধ্যায়
অরুণ রাতভর ম্যাকেনজির ব্যক্তিগত ডায়েরি এবং কোডযুক্ত চিঠিপত্র খুঁটিয়ে
খুঁটিয়ে পড়তে শুরু করলেন। ডায়েরির পাতায় তিনি জানতে পারলেন ম্যাকেনজি কীভাবে
গোপনে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং কীভাবে ব্রিটিশ সরকারের চোখ
ফাঁকি দিয়ে তাদের তথ্য সরবরাহ করতেন। ম্যাকেনজি লিখেছিলেন যে, ব্রিটিশ প্রশাসনের
কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা একটি গোপন
পরিকল্পনায় জড়িত। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভারত স্বাধীন হলেও যেন ক্ষমতার মূল
চাবিকাঠি তাদের হাতেই থাকে।
প্রতিদিন নতুন সূত্র খুঁজে বের করতে করতে অরুণ ইতিহাসের অজানা অধ্যায়ের
সঙ্গে পরিচিত হন। তিনি শহরের পুরোনো ভবন এবং রাস্তায় ঘুরে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেন।
যেমন, নদীর ধারের একটি পরিত্যক্ত গুদাম, যেখানে ম্যাকেনজি সম্ভবত স্বাধীনতা
সংগ্রামীদের সঙ্গে বৈঠক করতেন; কিংবা শহরের পুরনো লাইব্রেরি, যেখানে ম্যাকেনজি
গবেষণা করতেন। প্রতিটি নথি তাকে শহরের রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কের গভীরে নিয়ে
যায় এবং তিনি বোঝার চেষ্টা করেন কে কোথায় ছিল এবং কে কী জানত। তিনি বুঝতে পারেন,
ম্যাকেনজিকে হত্যা করা হয়েছিল কারণ তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল হস্তান্তরের
প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, যা প্রকাশ পেলে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির মুখোশ খুলে যেত।
অধ্যায় ৪: অদৃশ্য শক্তির উপস্থিতি
তদন্তের এক পর্যায়ে অরুণ পুরোনো বাংলোর ভিতরে একটি গোপন কক্ষ খুঁজে পান।
দেওয়ালের উপর একটি অদ্ভুত চিহ্ন, একটি ভাঙা দেয়ালপত্র এবং আসবাবপত্রের বিশেষ
বিন্যাস তাকে সেই গোপন কক্ষটির সন্ধান দেয়। কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করার পর তিনি
দেখতে পান, সেখানে একটি ছোট লোহার সিন্দুক রাখা।
সিন্দুকটি খুলতেই তিনি একটি পুরোনো, কালিমাখা বাক্স খুঁজে পান। বাক্সটি ছিল
চিঠি, নথিপত্র এবং কোডযুক্ত ডকুমেন্ট পূর্ণ। নথিতে শহরের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা
এবং গোপন বৈঠকের অংশগ্রহণকারীদের নাম ছিল। কিছু নথি থেকে তিনি বুঝতে পারেন যে, এটি
কেবল স্থানীয় ষড়যন্ত্র নয়, বরং এর পেছনে একটি আন্তর্জাতিক চক্র কাজ করছে—যার
লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের তথ্য চুরি করা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ভেঙে
দেওয়া। এই চক্রটি দেশের ভেতরকার কিছু ক্ষমতাশালী মানুষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ
করছিল।
অরুণ বুঝতে পারেন যে, এই তথ্য যদি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়, তবে শহরের
শান্তি এবং নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। তিনি প্রতিটি চিঠি ও নথি সাবধানে
পরীক্ষা করতে শুরু করেন। প্রতিটি নথিই তাকে এক নতুন রহস্যের দিকে টানে এবং তিনি
বুঝতে পারেন এই চক্রটি কতটা শক্তিশালী।
অধ্যায় ৫: সন্দেহের জাল
অরুণ বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে দেখা করেন এবং তাদের অতীত ও বর্তমান সম্পর্কে
জানতে চান। প্রতিটি সাক্ষাৎ তাকে নতুন নতুন সূত্রের দিকে নিয়ে যায়। তিনি বুঝতে
পারেন, এই ষড়যন্ত্রের জালের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
সন্দেহভাজন চরিত্রদের মধ্যে ছিলেন:
· বিনয় সরকার: একজন ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ।
স্বাধীনতার পর তিনি ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সব ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। তার
ক্ষমতা লাভের পথকে মসৃণ করতে তিনি যেকোনো কিছু করতে পারতেন। তার অহংকার ও
উচ্চাকাঙ্ক্ষা তাকে একজন সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করে।
· রাজেশ রায়: একজন ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামী, যিনি
একসময় ম্যাকেনজির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। কিন্তু তার গতিবিধি এবং কথাবার্তায় একটা
বিশ্বাসঘাতকতার ছাপ ছিল। তার আসল উদ্দেশ্য ছিল অজানা।
· মিসেস ডায়ানা জনসন: এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা পত্নী, যিনি
ম্যাকেনজির সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতেন। তার স্বামী
ভারত ছেড়ে গেলেও তিনি এখানে রয়ে গিয়েছিলেন।
অরুণ পুরোনো নোটবুক, হারানো মানচিত্র এবং গোপন বৈঠকের তথ্য—সবকিছু একত্রিত
করে রহস্যের গভীরে প্রবেশ করেন। প্রতিটি সূত্র তাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
তিনি জানতে পারেন, ম্যাকেনজি তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছে একটি ফাইল হস্তান্তর করতে
চেয়েছিলেন, যা ষড়যন্ত্রের মূল প্রমাণ ছিল।
অধ্যায় ৬: অন্ধকারের মুখে আলো
গোপন সূত্র এবং নথি বিশ্লেষণ করে অরুণ অবশেষে ষড়যন্ত্রের মূল হোতাকে
শনাক্ত করতে সক্ষম হন। তিনি তাকে একটি নির্জন জায়গায় মুখোমুখি করেন। হোতা কোনো
ধরনের ভয় না পেয়ে তার কাজের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বলেন যে, তার কাজ ছিল রাজনৈতিক
স্বার্থ রক্ষা করা এবং নতুন ক্ষমতা কাঠামোতে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করা। সে
বিশ্বাস করত যে, কিছু বড় সত্য গোপন রাখাটা দেশ ও দশের মঙ্গলের জন্য প্রয়োজনীয়।
অরুণ জানেন, এই তথ্য প্রকাশ করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এবং অনেক
নিরপরাধ মানুষ বিপদে পড়বে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই তথ্য জনসমক্ষে না আনার। তার
নৈতিকতা এবং শহরের বৃহত্তর শান্তির প্রতি তার দায়বদ্ধতা এই কঠিন সিদ্ধান্তকে আরও
শক্তিশালী করে। তিনি বুঝতে পারেন, কিছু সত্যকে গোপন রাখাই কখনও কখনও সবচেয়ে বড়
ন্যায়।
অধ্যায় ৭: অতীতের ছায়া
অরুণ শহরের পুরোনো রাস্তা, ভবন এবং অলিগলিতে হেঁটে অতীতের ছায়া দেখতে পান।
পুরোনো মসজিদ, বৌদ্ধ মন্দির, ব্রিটিশ আমলের প্রশাসনিক ভবন—সবকিছুই যেন সেই সময়ের
রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনার নীরব সাক্ষী। অলিগলিতে হাঁটতে হাঁটতে তিনি বুঝতে পারেন,
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অনেকেই এখনো অজানা পরিচয়ে সমাজে মিশে আছে। প্রতিদিন
নতুন সূত্র অতীতের অজানা অধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় করায়। তিনি পুরোনো ডায়েরি, হাতে
লেখা চিঠিপত্র, এবং সরকারি নথিপত্র ঘেঁটে বের করেন কীভাবে একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ড
একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশে পরিণত হয়।
অধ্যায় ৮: চূড়ান্ত সন্ধান
অরুণ সমস্ত প্রমাণ একত্রিত করে একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র তৈরি করেন। তিনি জানতে
পারেন, মূল হোতা ক্ষমতা লাভের জন্য ম্যাকেনজিকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল কারণ
ম্যাকেনজির কাছে তাদের ষড়যন্ত্রের সমস্ত গোপন তথ্য ছিল। প্রতিটি নথি, চিঠি, এবং
সাক্ষাৎকারের তথ্য বিশ্লেষণ করে অরুণ বুঝতে পারেন, কে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল এবং
কেন। এই তথ্যগুলো প্রকাশ করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, তাই তিনি তা না
করে একটি বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনা নেন।
অধ্যায় ৯: নীরব প্রতিশ্রুতি
অরুণ তার নথিপত্র ও প্রমাণ সংরক্ষণ করে রাখেন, কিন্তু জনসমক্ষে তা প্রকাশ
করেন না। তিনি বিশ্বাস করেন, ইতিহাসের কিছু অধ্যায় গোপন থাকা উচিত, যা সমাজের
কল্যাণে সহায়ক। এই নীরব প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে অরুণ এক ধরনের শান্তি ও ন্যায়
অনুভব করেন। তিনি জানেন, তার এই নীরবতাই শহরের মানুষের নিরাপত্তা এবং ইতিহাসের
সত্যের মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করবে। অরুণ প্রতিদিন নিজের কাজের গুরুত্ব অনুভব
করেন এবং ইতিহাসের অজানা অধ্যায় সংরক্ষণে অবদান রাখেন।
অধ্যায় ১০: সময়ের সাক্ষী
বছরের পর বছর কেটে যায়। কলকাতা ধীরে ধীরে পুনর্গঠিত হয় এবং শান্তির পথে
এগিয়ে চলে। মানুষ দাঙ্গা, অস্থিরতা এবং আতঙ্ক পেরিয়ে নতুন জীবন শুরু করে। অরুণ
ইতিহাসের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং নতুন প্রজন্মকে সতর্ক হতে অনুপ্রাণিত করেন।
তিনি উপলব্ধি করেন যে, তার নীরবতা ইতিহাসের প্রবাহকে বদলে দিয়েছে এবং একটি
শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
অধ্যায় ১১: পুনর্মিলন
অরুণ তার পরিবার এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে পুনর্মিলন করেন। তিনি বুঝতে পারেন,
অতীতের শিক্ষা এবং ইতিহাসের সতর্কতা আগামী প্রজন্মের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি
তার অভিজ্ঞতার কথা নিজের পরিবারের কাছে বর্ণনা করেন, তবে গোপন তথ্যগুলো গোপনই
রাখেন। শহরের নতুন প্রজন্ম ইতিহাস থেকে শিখে এগিয়ে যায়। অরুণ নিজেও শান্তি ও
সন্তুষ্টি অনুভব করেন যে, তিনি ইতিহাসের অজানা অধ্যায় সংরক্ষণ করতে পেরেছেন এবং
শহরের মানুষের নিরাপত্তা বজায় রেখেছেন।
অধ্যায় ১২: চূড়ান্ত সত্য
অরুণের সংগ্রহ করা নথি ও তথ্য ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিক প্রকাশ করে, তবে
তা জনসমক্ষে আনা হয় না। তিনি জানেন, ইতিহাসের কিছু অধ্যায় অজানা থাকলে সমাজের
ভারসাম্য বজায় থাকে। শহরের মানুষ স্বাধীনতা অর্জন করে এবং নতুন যুগের দিকে এগিয়ে
যায়। অরুণ ইতিহাসের নীরব রক্ষক হিসেবে তার জীবন শেষ করেন। তার জীবন আগামী
প্রজন্মের জন্য একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকে।