কবিতা
বড় হতে হতে
শর্মিষ্ঠা ঘোষ
বড় হতে হতে বড়
হতে হতে ছাড়িয়ে গেলাম সেই অভিমান
কোন সকালে নিকোন
উঠোন আসন পাতা কারুর জন্য
কারুর জন্য মঙ্গল
শাঁখ গাঁদার গাছে মৌ লোভী ভিড়
খুব সাধারণ সকাল
বিকেল চায়ের কাপ আর সুগার ফ্রি
কার ভালোলাগা কার
অভিরুচি মাপতে মাপতে অদল বদল
ঘর কোণ বার সব খুঁজে
খুঁজে সাজানো গোছানো স্বপ্ন যেমন
হয়ত রেস্ত খুব টানটান
হয়ত আকাশ নিজের মতন
তবু কিছু পাখি আপন
খেয়ালে কাঠকুটো আনে নিভৃত কথন
বড় হতে হতে বড়
হতে হতে আপন গরাদ ভেঙে সাতখান
এখন শেকল পরালেও
চলে লোহাও খানিক নরম সরম
বলতে শুনতে আজো ভালোলাগে
সেই যে শব্দ বোকার জন্য
তাই টেনে চলা যদি
পার হয় রাত্রিকানার পাহাড় যাপন
সীমানা
অঞ্জন ব্যানার্জ্জি
বন্ধুরা এগোতে বারণ
করেছিল
বান্ধবী হাত ধরে
টেনেছিল
নৌকার ছইয়ে আনন্দ
তুমি
ভেসেছি গান্ডিব ভাঙ্গতে
আমি।
স্বপ্নের উদ্দাম
ঢেউয়ে ভেসে
তোমার ঝংকৃত বুকের
আকাশে
আমি ভিজেছি জলের
প্লাবনে
শুকেয়েছি খর রৌদ্র
তাপে।
নৌকা মোহনায় ভাসবে
না বলে
সঙ্গী করেছ আমায়
প্যাডেল স্টিমারে
তুমি নিয়ে গেছ সমুদ্র
মোহনায়
ফিরেছি ভাঁটার টানে
আমি অক্ষমতায়।
তুমি ভেসেছ সীমাহীন
সীমানায়
ঢেউয়ে ভাসবার উদ্দাম
ক্ষমতায়
উজানে সমুদ্র পেরোবার
উন্মত্ত বাসনা
সাত সমুদ্র তোমার
লক্ষ্যের ঠিকানা।
আমার গন্ডি বদ্ধ
জলাশয়
ফিরেছি পুকুরের বদ্ধ
সীমানায়
অর্থহীন দাপাদাপি
ঢেউ মনে হয়
নিজেকে ভেজাই কর্টিসল
রসের ফেনায়।
নেওয়া
তাপস মাইতি
নেওয়াটা আমার ব্যক্তিগত
আমার মনের পরিবৃত্তের
মধ্যে পড়ে।
বাহিরে সমস্ত আঘাত
ঘিরে
আন্দোলিত হয়
যত বজ্রকটূ,
একমাত্র আমি তার
রক্ষার সুদর্শন চক্র
।
কোনো ভ্রান্তসমূহের
আশঙ্কায় নেই
নীতিও কঠোর ভাবে
সজাগ থেকেছে আমার
বৃত্তের চারপাশে।
যতই দুমড়ে যাই না
কেন
যে কোনো কূট প্ররোচনা
নেওয়াটা আমার ব্যক্তিগত,
খুঁটে খুঁটে জঞ্জাল
সাফ করাটা
আমার ব্যক্তিগত।
দুটি কবিতা
সুব্রত ছাটুই
১
জোছনায় বিষ
তুলসীতলায় আলোহীন
জোনাকির আড্ডায়
শেষ পর্যন্ত অন্ধকার
ঘনিষ্ঠ হয় দুষ্প্রাপ্য নিঃশব্দে
প্রদীপের বুকে পোড়ে
নিস্তরঙ্গ সন্ধ্যায়
প্রতি শনিবার....
দুই পুরুষ তিন পৃথিবী
ফেরত চায় -- ফেরত চায় দাম্পত্যের ঘর,
নারী সুখ অপার সংসার
এবেলা ওবেলা চিলেকোঠার ছাদে।
রাত এসে থামে আকাশের
অন্তহীন পথে
ওপারের তুলসীতলায়
চুপিচুপি বাদুড় জোছনা সরায় শেষরাতে।
শিকলে বাঁধা দাম্পত্য
প্রেম, অপ্রেম, দ্বেষ, ঘৃণা, হিংসা
জয় পরাজয় আর অতর্কিতে
ভয়ানক লোভ প্রাণহীন অন্ধকারে
জাল বিছায় আমাদের
শরীরের সব নুন বস্তা ভর্তি হয়ে।
তা র প র
নদী নারী
সতী অসতী
সাঁ ত রে
ডাঙায় উঠে পড়ে
...
পৃথিবী প্রবাহে অপরিচিত
পূর্ব এবং উত্তর পুরুষের
প্রাণ প্রতিষ্ঠা
হয় ফেস বুকে রাতদুপুরে...
২
মুখ সন্ধের কবিতা
যতই মুখোমুখি হই
আজকাল কেউ কারোর
মুখ দেখতে পাই না --
সময় পথ আড়াল করে;
পাখিদের শিস ধানক্ষেত
জুড়ে অবোধ
ছোটাছুটি করে -- পাখি শুধু থাকে না।
সবুজ আকাশ পাখি বিহীন
কিন্তু অনন্ত আকাশে
পাখিদের আবক্ষ মূর্তি
যে চুরি করল
সে তো আলো বিসর্জন
দিতে জানে না....
ভালোবাসায় মানুষ
ও মানুষের ভালোবাসায় পার্থিব পাখিকথা।
আকাশের গহনে বেঁচে
থাকা ডাকে
ডাকে বানভাসি চোখ
যে চোখ "ভালোবাসা"
শব্দবন্ধে এতকাল
শুধু বোকা বোকা দাঁড়
করিয়ে রাখল।
কিশোরী রোদে পুড়ে
ছাই হল মাটির ময়না
আর ময়না পাখি
-- আর তার চোখের কিনারায়
জমা হল অপেক্ষমান
আগামীর সুখ ও শান্তির প্রত্যাদেশ
আমি তোমাকে নক্ষত্রের
মেখে
তোমার উদ্দেশ্যে
মুখসন্ধের কবিতায় রচিত হল কেন ফড়িং হলে?