অনুবাদ কবিতা
অনুবাদ : প্রদীপ কুমার রায়
জীবন জীবন
মূল ওড়িআ কবিতা
প্রদীপ কুমার পণ্ডা
পিঠকে প্রস্তুত করে রাখতে হবে
বইতে আহত পৃথিবীর রক্ত,
যেই খড়্গহস্ত তৃষ্ণার্তরা
খুঁজতে থাকবে সামান্য ছায়া বিশ্রান্তির জন্য
তাদের জন্য মেঘ হতে পড়বে
এই এক জন্ম।
বৃথাই এক প্রতীক অপেক্ষা করে থাকবে
আমার কবিতা কে আবর্জনার স্তূপে,
নিরবতাকেই প্রস্তুত রাখতে হবে
তা'কে শান দেওয়ার জন্য,
কে জানে অপর পারে অপেক্ষায় থাকা লোকেরা
পাঠাতে পারে একটি নৌকা
ভেসে যেতে থাকা লোকটার উদ্ধারের জন্য,
বাঁচিয়ে রাখতে হবে
কিছু মিনতি অনাগতের জন্য।
প্রতিটি খাঁচার ভেতরে জোড়া জোড়া চোখ
উড়ে যেতে প্রস্তুত
অন্ধ অন্তরীক্ষে একটি ও তারা নেই,
তবুও সাজিয়ে রাখতে হবে
একটি আকাশ অনন্তে।
ভাঙ্গা ছাতা, ফিরে আসতে রাস্তা না পাওয়া
পাগল ভিখারীর ভীক্ষের ঝোলায় বেঁচে থাকা
এক মুঠো চাল,
মৃত বাবা মা রা ঘুমোতে না পারা রাত
মাটি কর্ষণ করে করে অচল লাঙ্গল
ত্বকের তলায় সঞ্চরিত কিছু লোভ,
সারারাত শিশিরে ভেজা
কোঁচকানো অস্বস্তি,
দীঘি র পাড়ের বট গাছের নিচে বসে থাকা
কুঁজো পাথরের আশ্বাসনা
ট্রাঙ্ক ভেতরের অদরকারি কাগজপত্রের স্তুপ
কবে না কবে পাওয়ার
লুকোনো কামনার নক্সা
সবকিছু গুছিয়ে রাখতে হবে
এক শরীরেভোগ করতে রক্ত রক্ত
আগুন আগুন, খিদে খিদে,
ক্ষিতি ক্ষিতি, জীবন জীবন ।
শিশু
মূল ওড়িআ কবিতা
শিশুদের চোখে যে পৃথিবী হাঁসছে
সে আমাদের পৃথিবী নয়
আমাদের পৃথিবী কাছাকাছি
চেটে দিয়েছে আগুনএখনো ফুটছে
লাল আর হলুদ ফুল হয়েতার পৃথিবী তে
যে'দিন আমরা
আমাদের শৈশব কে হত্যা করি
সে'দিন থেকে আমাদের পৃথিবী তে
বারবার ভূমিকংপ হয়,
হানাহানি রক্তপাত হয়,
নিজের মতো দেখতে মুখোশের নিচে
শত্রৃ লুকিয়ে থাকে
আমাদের পৃথিবীতেআমরা কেবলই দু'জন
আমি আর আমি, মুখোমুখি
কুস্তি, রতি সব নিজের সাথে
বন্ধু, প্রিয়জন পেছনফিরে বসে থাকে
তা'দের ভেতর থেকে চেনা যায়না
বাবা কে, মা কে।
শিশু র পৃথিবী তে মৃত্যু থাকেনা
আঁধার থাকেনা শিশুর চোখে
শত্রৃ থাকেনা, সূর্য্যাস্ত থাকেনা,
থাকেনা গত এবং আগামীকাল
উদয় হতে হতেশিশুর চোখে চোখ মিলিয়ে
সূর্য্য রাস্তা ভুলে যায়
আমরা মরে গেছি কবের থেকে
আমাদের হাতে মৃত পৃথিবী তে
বিশ্বব্রহ্মাণ্ড় এখনো জীবন্ত কিন্তু
শিশুর হাঁ র ভেতরে ।।